পেশাদার প্রতারক ফরিদুল আলম চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়ন খন্দকারপাড়া গ্রামের মৃত্যু সরোয়ার কামালের বড় ছেলে দিনে ৩০০ টাকা থেকে মাসে ৮-১০ হাজার টাকায় ভাড়ায় স্বামী হিসাবে কাজ করেন । আবার ভাড়াটে স্বামী হয়ে একাধিক নারীর সাথে প্রতারনা করে বিয়ে করে স্ত্রীদের দিয়ে মাদক ও দেহ ব্যবসা করান রাজধা্নীর অভিজাত ফ্লাটে এবং বস্তিতে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।
পেশাদার প্রতারক ফরিদুল আলমের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় প্রথম সন্তান আসিফের মায়ের সাথে পরে আসিফের মাকে তালাক দিয়ে ঢাকায় এসে পরকীয়া করে বিয়ে করেন দুবাই প্রবাসী নাহিদা ও পুতুলের মা রানী আক্তারকে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে জন্ম হয় রাকিবুল আলমের তারপর সিদ্ধান্ত হয় স্বামী-স্ত্রী’ পরিচয়ে দুজন রাজধানীতে বসবাস করবেন। এর পরই বিউটি পার্লার ব্যবসার আড়ালে রানী শুরু করে জো’রালো যৌ’ন ব্যবসা। এমন শতশত পরিকল্পনায় দেহব্যবসা করেন ফরিদুল আলম । এ ছাড়াও, ফরিদুল রাজধানীর শান্তিনগর, বাড্ডা, ফার্মগেট এলাকাসহ ৮-৯টি স্থানে যৌ’নকর্মীদের স্বামী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে নিজে কামায় মোটা অঙ্কের টাকা। ফরিদুল আলমের যৌন ব্যবসার সাথে কমিশন ভিত্তিক সহযোগীতা করেন অনেক খদ্দের ।
রাজধানীর কুড়িল মোড়ের এক ফুটপাতের খুদে চা দোকানদার রিনা খাতুনের সাথে পরিচয় হয় ফরিদুল আলমের তারপর ভাড়াটে স্বামী হয়ে মাসে ১৫০০ টাকা নেয় । কিছু দিন রীনার সাথে সংসার করার পর রীনার সমস্ত জমানো টাকা এবং বেশ কিছু গহণা নিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক ফরিদুল আলম । ভাড়াটে স্বামী হিসাবে রীনার সাথে থাকার সুবাদে রীনা আক্তারকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী ।
এছাড়াও কাকলী-বনানী মোড়ে তিনটি সন্তান নিয়ে ফুটপাতে কখনো পিঠা, কখনো মৌসুমি ফল, সঙ্গে চা-পান বিক্রি করে জীবন চালান সিবলী বেগম।শীতের পিঠা খাওয়ার সুবাদে ফরিদুল আলমের পরিচয় হয় সিবলী বেগমের তারপর সিবলী বেগমের একটি এনজিও থেকে ঋণ পেতে ভাড়াটে স্বামী হিসাকব কাজ করে ফরিদুল আলম । সিবলীর সাথে সংসার করার সময় প্রতি রাতে ফরিদুল বিভিন্ন মানুষকে বাসায় নিয়ে এসে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক করাতে বাধ্য করে সিবলীকে । তারপর ঋণের টাকা তুলে তা থেকে ১ হাজার টাকা দিয়েছেন ফরিদুল আলমকে । মাত্র ১ হাজার টাকাতেই তার সঙ্গে স্বামী পরিচয়ে এনজিও অফিসে গিয়ে ছবি তুলে ঋণ পেতে সহায়তা করেন ফরিদুল আলম নামের এই ভন্ড প্রতারক । তারপর সিবলীর সমস্ত টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ফরিদুল আলম।
ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে যৌ’নকর্মীদের আনাগোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ওইসব যৌ’নকর্মীরা এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে হাই লেবেলে দেহ ব্যবসা শুরু করেছে। বাড়ি ভাড়া নিতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী ছাড়া বাড়ির মালিক বাসা ভাড়া দিতে চান না। বাড়ি ভাড়া নেয়ার ওই প্রতিবন্ধকতার কথা চিন্তা করে যৌ’নকর্মীরা তাদের পূর্বপরিচিত ফরিদুল আলমকে ভাড়াটে স্বামী হিসেবে ব্যবহার করেন ।
ফরিদুল আলম চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের খন্দকারপাড়া গ্রাম থেকে অভাবের তাড়নায় ঢাকায় আসেন। এসএসসিও পাস নয়, তাই কোনো চাকরি দিতে চাচ্ছেন না কেউ। এরই মধ্যে দেখা মিলে ছিনতাইকারী আজুলের সঙ্গে। নিরুপায় হয়ে তার সঙ্গে যোগ দেয় ফার্মগেট এলাকায় ছি’নতাইয়ের কাজে। পরিবর্তন করে ফেলে নিজের বংশ-পরিচয়ও। এরই মধ্যে পরিচয় হয় স্বামী পরিত্যক্তা বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে।
স্বামী পরিত্যক্তা স্ত্রীদের নিয়ে বাড়ি ভাড়া করার সময় বাড়ির মালিককে বলা হয় আমি নিয়মিত ঢাকায় থাকি না, বাইরের কোনো জে’লায় চাকরি বা ব্যবসা করি। একই সঙ্গে বলা হয়, বাসায় নিয়মিত থাকবে তার স্ত্রী’ ও দুই বা তিন বোন। ওই বোনদের থাকার কথা বলে জায়েজ করে নেয়া হয় আরো দুই-তিনজন যৌ’নকর্মীকে। এভাবেই রাজধানী জুড়ে ফ্ল্যাট বাড়িগুলোতে চলছে ফরিদুলের যৌ’ন বাণিজ্য।
কথা হয় বনশ্রীর মাহমুদার সঙ্গে। মাহমুদাকে বাসা ভাড়া দিতে চান না বাড়ির মালিকরা তারপর ফরিদুল আলম অন্তরার ভাড়াটে স্বামী হয়ে বাড়ির মালিকের সাথে কথা বলেন । স্বামী ছাড়া বাসা ভাড়া নেয়া অসম্ভব তাই বাসার অভাব হলেও এসব নারীদের স্বামীর অভাব হয় না। মাহমুদা ও তার ভাড়াটে স্বামী ফরিদুলকে নিয়ে বনশ্রী এলাকায় বেশ কয়েকটি বাসা পাল্টিয়েছেন।
ফরিদুল আলম তার স্ত্রীদের নিয়ে নতুন নতুন এলাকায় বিভিন্ন সমিতির কাছ থেকে লোন নিয়ে পালিয়ে যান এবং অসহায় নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করেন। তবে বেশি দিন তিনি এক এলাকায় থাকেন না। জানা গেছে, অন্তরাও মত অনেক মেয়েকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্বামী হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দেয় এবং সে মোটা টাকাও নেয়। তথাপি স্ত্রীদের ভাড়ার বাসায় চলে মা’দকের রম’রমা ব্যবসা। এমন ভাড়া করা শত শত ফ্লাটে দেহ ব্যবসা ও মা’দকের ব্যবসা করেন ফরিদুল আলম ।
এদিকে, নার্গিস নামের এক মেয়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিনি বাইং হাউজের কাজ করেন গ্রামের বাড়িতে বাবা-মাকে সেটি বলেছেন। কিন্তু আসলেই তিনি বাইং হাউজের নামে যৌ’ন ব্যবসা করেন। একটি ফ্ল্যাটে প্রতিদিন চাকরির কথা বলে বাসা থেকে বের হন এরপর কোনোদিন বাসায় ফেরেন আবার কোনো সময় থেকে যান ফরিদুল আলমের বাসায় ।এছাড়া পাসপোর্ট অফিস গুলোতে রয়েছে ফরিদুল আলমের এক বিশাল বড় সিন্ডিকেট , পাসপোর্ট অফিসে কোনো মহিলা স্বামী ছাড়া একা গেলে তাকে স্বামীর উপস্থিতি দেখানোর প্রয়োজনে ভাড়াটে স্বামী হিসাবে কাজ করে ঝামেলা থেকে মুক্ত করেন মহিলাদের ।
অনুসন্ধানে জানা যায় ,ফরিদুল আলমের তিন-চারটে ফ্ল্যাট বাড়িতে স্বামীর পরিচয়ে ভাড়া খাটার বিষয়টি জানা গেছে। অ’পরপক্ষে ভাড়াকৃত স্ত্রী’রাও ৪-৫ জায়গায় বাসা ভাড়া করে দেহব্যবসা করেন ।ফরিদুল আলমের ভাড়া খাটার শর্ত হচ্ছে সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন স্বামী পরিচয়ে বাসায় অবস্থান করতে হবে, আর বাসার বাজারও করে দিতে হবে। বাসায় অবস্থান করা ও বাজার করার শর্ত দেয়ার মানে হচ্ছে যাতে আশপাশের লোকজন কোনো প্রকার স’ন্দেহ না করেন।
সালাম ও মিরপুর বড়বাগের জানে আলমের সাথে পরিচয় হয় ফরিদুল আলমের তারপর ধীরে ধীরে জড়িয়ে যান ফরিদুল আলমের ব্যবসার সাথে। বেশ কয়েকবার ধ’রা পড়ে জে’লও খাটেন ফরিদুল আলম । বর্তমানে বড়বাগের জানে আলম মাদক ও নারী ব্যবসায় ফরিদুল আলমকে সব ধরনের সহয়যাগীতা করছে । এখন রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা ও গাবতলী এলাকায় ছয়টি বাসায় ছয় নারীর ভাড়াটে স্বামী ফরিদুল আলম । ভাড়া পান ৩০-৪০ হাজার টাকা। কোনো মাসে বেশি পান আবার কোনো মাসে কিছুটা কমও পান এমনটাই জানান সালাম।
জানে আলম নিজের স্ত্রী’ ও এক মেয়ে নিয়ে থাকেন মিরপুর এলাকায়। ভাড়ায় স্বামী খাটা ফরিদুলের সাহায্য করা এখন তার একমাত্র পেশা বলে জানা গেছে। জানা গেছে, রাজধানীতে বিভিন্ন ক্ষুদে ব্যবসার সঙ্গে জ’ড়িত বেশিরভাগ বস্তিবাসী বা ভাসমান নারীরা উদয়-অস্ত পরিশ্রম করে সন্তানদের নিয়ে জীবন ধারণ করছেন।এসব নারীদের নিয়ে অবৈধ কাজ করছেন তারা ।ব্যবসা পরিচালনা বা সম্প্রসারণের কারণে কখনো কখনো ক্ষুদ্রঋণের নামে সুদের উপর টাকা দেন তারা । কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী’ দুজনের ছবি ও নাম ব্যবহার করে এবং দুজনকেই ঋণের দায়ে আবদ্ধ রাখেন।
এমন ব্যবসার জন্য বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন কড়াইল বস্তিতে মা’দক ও যৌ’ন ব্যবসা করেন । এ এলাকার স্থানীয় ১৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা গনি মিয়াকে ব্লাকমেইল করে টাকা ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে সারারাত নির্য়াতন তারপর যৌ’ন অ’ভিযোগের কারণ দেখিয়ে এক পতিতা দিয়ে মা’মলা করান । কড়াইল বস্তির বিভিন্ন স্থানে এ ব্যবসা চলছে। ওই পতিতা এভাবেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষকে ফাঁ’সিয়ে দেয় ফরিদুল আলম । এবং পরবর্তীতে পতিতা মোটা অঙ্কের টাকার দাবি করে থাকে।
বর্তমান রাজধানীতে স্বামী বাণিজ্য চলে বনশ্রী গুলশান বনানী ধানমন্ডি নতুন বাজার বাড্ডা কুড়িল বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, খিলগাঁও বাসাবো রাজধানীর বেশ কয়েকটি জায়গায় স্বামী স্ত্রী’র ভাড়ার এই বাণিজ্য চলে।এনজিওগুলোর এ নিয়মের কারণে স্বামী পরিত্যক্তাদের ক্ষুদ্রঋণ পাওয়ার সুযোগ থাকে না। সে ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে পরিচিত এবং ভালো স’ম্পর্ক আছে এমন কাউকে স্বামী হিসেবে ভাড়া করে সংস্থাগুলো থেকে ব্যবসার ঋণ পান মহিলারা।
বিনিময়ে ভাড়াটে স্বামী ফরিদুলকে ধরিয়ে দিতে হয় নগদ কিছু টাকা। আবার জানা গেছে, অনেকে কেবল ভালো স’ম্পর্কের কারণে বিনা টাকায় মহিলাদের ঋণ পেতে সহায়তা করেন তবে বিনিময় অন্য কিছু।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাম্প্রতিককালে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে অফিসে যেতে হয়। অজ্ঞতাপ্রসূত কোনো নারী একা পাসপোর্টের ছবি তুলতে গেলে তাকে স্বামী সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়। সেই ক্ষেত্রে মহিলা পাসপোর্ট প্রত্যাশীকে সময় ব্যয় করে আরেক দিন আসতে হয় অথবা অন্য একদিন যেতে হয়।
মহিলারা ফিরে যাওয়ার সময় এখানকার কিছু দালাল সুকৌশলে মহিলাদের প্রস্তাব দেন, টাকা-পয়সা খরচ করে আবার আসবেন। তারচেয়ে মাত্র ৫০০ টাকা খরচ করেন। আমি একজন লোক দিচ্ছি, উনি আপনার সঙ্গে যাবেন এবং মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য উনাকে স্বামী পরিচয় দেবেন। ছবিটা তোলা হলে চলে যাবেন।
এদিকে, স্বামী বাণিজ্য এগিয়ে আছে ভাষানটেক, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা, বাড্ডা, ভাটারা, সবুজবাগ, গাবতলী, সায়দাবাদ, সদরঘাট সহ রাজধানীর বিভিন্ন শেষ সীমানা এলাকাতেই বেশিরভাগ স্বামী-স্ত্রী’ বাণিজ্য চলে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি হেড কোয়াটার্সের এক অ’তিরিক্ত ডিআইজি বলেন, এসব ব্যবসা ও বিভিন্ন অ’প’রাধ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। এক হিসেবে নেই বললেই চলে। তার কারণ হলো এসব অ’প’রাধীদের ধরতে আমাদের পু’লিশ সদস্যরা এটি দমনের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। তবে বতর্মানে যদি কেউ চু’রি করে এসব অ’প’রাধের সঙ্গে যু’ক্ত হয় তবে তাদের বি’রুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিবি পু’লিশের এক কর্মকতা জানান, আমাদের দেশের রাজধানী ঢাকা। এখানে বসবাসের অন্যতম জায়গা। লক্ষ লক্ষ লোক এ শহরে বসবাস করে। এতো লোকের মাঝে যারা এসব কাজ করে তাদের বি’রুদ্ধে আম’রা আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। তবে যদি কেউ গো’পনে এসব কাজ করে তাহলে তাদের শনাক্ত করে আম’রা আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করব।। আবার ভাড়াটে স্বামী হয়ে একাধিক নারীর সাথে প্রতারনা করে বিয়ে করে স্ত্রীদের দিয়ে মাদক ও দেহ ব্যবসা করান রাজধা্নীর অভিজাত ফ্লাটে এবং বস্তিতে এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।